রবিবার, ১৯ Jun ২০২২, ০৭:৫৫ পূর্বাহ্ন
আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদেরকে ভালো অবস্থার মাধ্যমে পুরস্কৃত করেন আবার মন্দ অবস্থার মাধ্যমে পুরস্কৃত করেন। অসুস্থতার মাধ্যমেও পুরস্কৃত করেন। অসুস্থতাও নেয়ামত।ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, সুস্থতা আল্লাহ পাকের নিয়ামত এবং অসুস্থতা ও আল্লাহ পাকের নিয়ামত। ঈমানের বরকতে অসুস্থতা নেয়ামত হয় এবং দরিদ্রতা নেয়ামত হয়ে যায় । ব্যক্তি গরীব হয়ে গেল সেটাও নেয়ামত, অসুস্থ হয়ে গেল সেটাও নেয়ামত, তাঁর ঈমানের বরকতে রহমত হয়ে যায়। আল্লাহ তাআলা অসুস্থতার মধ্যে অসুস্থতার পুরস্কার দান করবেন দরিদ্রতার মাঝে দরিদ্রতার পুরস্কার দান করবেন। যেমন আইয়ুব আলাইহিস সালামকে আল্লাহতাআলা অসুস্থতা দান করেছেন। তিনি বহু বছর অসুস্থ ছিলেন। তো অসুস্থতা কোন মুসিবত নয়।যে অসুস্থতা মুসিবত সেটাতো ভিন্ন। সেটা তো দুষমনদের কে দেওয়া হয়। হুযুর সাল্লাল্লাহু সাল্লাম অনেক অসুস্থ বেশি থাকতেন। তিনি চরম জ্বরে আক্রান্ত থাকতেন । দুজন ব্যক্তির বরাবর জ্বর এককভাবে তার হত।একথা হাদিস আছে যে, দুজনের বরাবর আমার জ্বর হয়। আমরা তো আমাদের দ্বিন থেকে বেখবর। এটা বড় মুসিবত। এজন্য আমরা হালাতের মধ্যে ফেঁসে যাই। যেমন মৌমাছি মধুর মধ্যে আটকা পড়ে যায় এবং আবর্জনার মাছি আবর্জনার মধ্যে আটকা পড়ে গেল।ব্যস, ভালো অবস্থায় মিঠাই এর মধ্যে ফেঁসে গেলো আর খারাপ অবস্থায় তো খারাপ এর মধ্যে ,গাফলতের মধ্যে আটকা পড়ে গেল।
হালাত আল্লাহমুখি করার জন্যই এসে থাকে
হালাত আল্লাহমুখি করার জন্যই এসে থাকে। হালাতকে সংকীর্ণ করে দেওয়া হয়; যেমন জানোয়ার বেশি অবাধ্যতা করলে তার লাগাম কে টাইট করে দেওয়া হয় । আরও বেশি অবাধ্যতা করলে প্রহার করা হয়। আল্লাহ পাকের নিজামও ঠিক এমনি, সর্বাবস্থায় আল্লাহমুখি হওয়া। যা হয় তা সবই আমাদের কল্যাণের জন্যই।কখনো হালাতকে ভয় না করা বরং আল্লাহকে ভয় করা ।কারণ, হালাত কে দেন? আল্লাহ পাকই দেন। রাত দিন আল্লাহপাকই দেন। চন্দ্র সূর্য আল্লাহপাক উদিত করেন। এভাবেই আল্লাহ পাক সমস্ত হালাতকে নিয়ে আসেন। মন্দ হালত আসলে আল্লাহমুখী হও, নিজের গুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর, যাতে আল্লাহ পাক এই হালাত কে উঠিয়ে নেন। আমাদের দোয়া, আমাদের ইস্তেগফার এত বেশি হয় যে, যতটুকুন আল্লাহপাক চাচ্ছেন। তো আল্লাহপাক হালাত আপন কুদরতে উঠিয়ে নিবেন। এ হালতের সম্পর্ক আল্লাহপাকের সাথে, এজন্য আমরা আমাদের কাজে লেগে যাই। দুনিয়ার মানুষ কি করছে সে দিকে ভ্রূক্ষেপ না করি। বরং এখন আমাদের করণীয় কাজে মনোযোগী হই। তাহলে আল্লাহ পাক খুশি হবেন। আর আল্লাহ খুশি হলে সকল হালাত ঠিক হয়ে যাবে।
আমাদের করণীয়
এজন্য আমরা নিজেদের জিকির,নিজেদের দোয়া ও আমলে জমে যাই।একদিকে হালাত খারাপ হচ্ছে অন্যদিকে আমল ছুটে যাওয়ার কারণে আখেরাত তৈরি হচ্ছে না। উভয় জাহানের লোকসান হচ্ছে। এটা কোন বুদ্ধিমত্তার পরিচয় নয় যে, উভয় জাহানে লোকসান স্বীকার করবে। এমন না হওয়া চাই ।আল্লাহ পাক আমাদেরকে সুযোগ দান করেছেন তাই আমলের মধ্যে জমে থাকি। নামাজ পড়ি। জিকির করি। সাদাকা দেই। নিজের আমল কে আল্লাহ পাকের সাহায্য আসার উসিলা বানাই। হুকুম হল, নিজের আমল গুলোকে আল্লাহ পাকের সাহায্য আসার উসিলা বানানো। যেমন, বালতি ও দড়ি পানি উঠানোর উসিলা হয়ে থাকে। ঠিক এমনিভাবে আল্লাহ সাহায্য গ্রহণ করার জন্য নিজের আমল কে উসিলা বানাই। এজন্যেই আল্লাহপাক আমল করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। খন্দকের যুদ্ধের সময় সাহাবায়ে কেরাম রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু জিজ্ঞাসা করলেনঃ ইয়া রাসুলূল্লাহ! আমাদের উপর মুশরিকদের আক্রমণ অনেক তীব্র হচ্ছে, অনেক কঠিন অবস্থা অতিবাহিত হচ্ছে , হালাত অনেক খারাপ তো আমরা কি দোয়া করব? তো তারা প্রশ্ন করলেন যে ;আল্লাহর কাছে আমরা কি চাইব? তো এটা ছিল সাহাবাদের তরিকা; আল্লাহর কাছে আমরা কি চাইবো? আমাদের মত নয় যে, শুধুমাত্র কি হলো? কি হলো? কি হলো? তো এখন আমরা আল্লাহপাকের কাছে কি দোয়া করব, হালত তো অনেক খারাপ হয়ে যাচ্ছে । নবি কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করলেনঃ আল্লাহর কাছে এই দোয়া করো যে ,
اللهم استر عوراتنا وامن روعاتنا
( ইয়া আল্লাহ ! আমাদের দোষ আবৃত করুন এবং ভীতিকে নিরাপত্তার দ্বারা বদলে দিন।)
এই দোয়া মুখস্থ করো। যদি আল্লাহ পাক বোধ বুদ্ধি দিয়ে থাকেন অন্যথায় তো নাদানীর কারণে সব নষ্ট হয়ে যাবে।
اللهم استر عوراتنا وامن روعاتنا
( ইয়া আল্লাহ ! আমাদের দোষ আবৃত করুন এবং ভীতিকে নিরাপত্তার দ্বারা বদলে দিন।)
আমরা দোয়া করলাম আল্লাহতাআলা আমাদের আমাদের হালাত পরিবর্তন করে দিলেন। আমাদের কাছে তো সমস্ত বিষয়ে সমাধানের পথ রয়েছে,। আমাদের দ্বিন তো হেদায়েত দ্বিন।
Leave a Reply