রবিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২১, ০৯:৫৯ অপরাহ্ন
আমীর-শূরা ইস্যুতে মাওলানা আব্দুল মালেক সাহেব হাফিজাহুল্লাহ এর বক্তব্যের সার-সংক্ষেপ এখানে দেওয়া হলো । বিস্তারিত এই মাসের আল কাওসারে পাবেন ইনশাআল্লাহ ।
কোন তানজিম, তাহরীক বা কোন দ্বীনি জামাতের আমির আর আমিরুল মোমেনীন বা খলীফাতুল মুসলেমিন এক কথা নয় । যারা তাবলীগ জামাতের জিম্মাদার বা আমির ছিলেন তাদের কেউ আমিরুল মোমেনীন ছিলেন না বরং তারা এই তাহরীক অর্থাৎ মাওলানা ইলিয়াস রহঃ দাওয়াতের যে পদ্ধতির দিকে উদ্বুদ্ধ করেছেন সে পদ্ধতির যে কাজ, সেই কাজের জিম্মাদার বা আমির ছিলেন । আমিরুল মোমেনীন বা খলীফাতুল মুসলিমীন ছিলেন না । এ ধরনের কাজের আমীরের ক্ষেত্রে আমিরুল মোমেনীন বা খলীফাতুল মুসলিমীন এর বিধান প্রয়োগ করাটা নতুন আরেক বিদআত । কারণ এই দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য অনেক । আমিরুল মুমিনিনের অধীনে তো নাহি আনিল মুনকারের সব কাজ হবে । কাফেরের সঙ্গে জিহাদ করবে, হদ কায়েম করবে । আমিরুল মোমেনীন এর কাছে “কুওয়াতে ক্বাহেরা” থাকতে হয় । আমিরুল মুমিনিন একাধিক হয় না । ইসলামে একাধিক আমিরুল মুমিনিন নেই ।
এখন সমস্যা হলো – দ্বীনি জামাতের জিম্মাদারের উপর আমিরুল মুমিনিন ও খলীফাতুল মুসলিমীন এর সকল বিধান প্রয়োগ করা হচ্ছে। এজন্য বলে বেড়াচ্ছে যে, শূরা চলবে না, ফয়সালওয়ালা শূরা চলবে না, পরিচালনার একমাত্র পদ্ধতি ইমারত, আমিরের সহযোগী হিসেবে থাকবে শূরা, আমির শূরার অধীন হবেন না ইত্যাদি । তাদের মতে শূরা থাকবে, তারা মাশোয়ারা দিবে – আমিরের ইচ্ছা, মানলে মানলো, না মানলে নাই। এই হলো শূরার অবস্থান। অথচ শরীয়াতে শূরার কথা আমির মানতে বাধ্য যদি শূরা শরয়ী দলিল পেশ করে । এক্ষেত্রে কেবলমাত্র যেহেতু তিনি আমির, তাই – “ম্যয় নেহি মানতা” বলার সুযোগ নাই।
মোটকথা – যে কোনো দ্বীনি কাজ পরিচালনায় শুধু আমিরের পদ্ধতি চলবে, শূরার পদ্ধতি চলবেনা বা আমিরের পদ্ধতি ফরয আর শূরার পদ্ধতি হারাম – এগুলো ভুল কথা । ইসলামী খেলাফতের জন্য ইমারতের পদ্ধতি অবশ্যকভাবে নির্ধারিত । আমির থাকবে আর তার সহযোগিতার জন্য থাকবে শূরা । এছাড়া অন্য যে কোনো দ্বীনি কাজে আমিরের পদ্ধতি বা শূরার পদ্ধতি সবই মুবাহ । যেমন একটা মাদ্রাসা, একটা খানকাহ, একটা ইসলামী রাজনৈতিক দল, একটা তানজিম, তাহরীক বা কোন দ্বীনি প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে কোরআন হাদিসের কোথাও কি এরকম নির্ধারিত করে দেওয়া হয়েছে যে, সেটা পরিচালনার জন্য একজনকে অবশ্যই আমির বানাতে হবে ? এরকম কেউ দাবি করলে তাকে অবশ্যই দলিল পেশ করতে হবে । আর স্মরণযোগ্য – এখানে আমিরুল মোমেনীনের হাদিস নিয়ে আসলে হবে না, সেটা তো সুস্পষ্ট ভিন্ন প্রসঙ্গ ।
Leave a Reply