বৃহস্পতিবার, ২৩ Jun ২০২২, ১০:৩১ পূর্বাহ্ন
মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল নোমানঃ
হযরতজি সালেসের(তৃতীয় হযরতজির) কাছে যদি তাবলীগের মেহনতের উসূল বদলানোর উমূর পেশ করা হতো,তবে তিনি বলতেন ভাই এখন নয়। যখন আমাদের সব সাথী একত্র হবেন তখন আমি পরামর্শ করে তোমাদের জানিয়ে দেবো। কিন্তু যদি তাবলীগের মৌলিক উসূল বদলানোর উমূর পেশ করা হতো তখন তিনি বলতেন,
“ভাই!হাম তো লাকীর কে ফাকীর হ্যায়।হামকো জিতনা কাহা গিয়া সির্ফ উতনা হি হাম কারসাক্তে হ্যায়”
অর্থাৎ “ভাই,আমরা তো হচ্ছি সীমারেখার অধীনস্থ।আমাদের যতটুকু বলা হয়েছে শুধু অতটুকুই আমরা করতে পারবো।”
তাবলীগের মেহনতের উসূল হচ্ছে সাধারণ বিষয়বস্তুর আওতাধীন। যেমন-গাস্ত আমাদের এখানে বিকেলে হয়,আমরা চাচ্ছি মাগরিবে করতে বা তালিমের সময়টা পরিবর্তন করতে চাচ্ছি বা আমরা প্রতি মসজিদে তিনদিন এর বদলায় দুদিন বা কম থাকতে চাচ্ছি ইত্যাদি ইত্যাদি।
আর মৌলিক উসূল হচ্ছে, কি কি কথা বলতে হবে ছয় নাম্বারে,কি কি কিতাব পড়তে হবে তালিমে, গাস্ত কোথায় কোথায় করা যাবে বা যাবে না,চিল্লার সময়কে কমাতে চাওয়া, কে মারকাজে থাকতে পারবে কে পারবেন না এগুলো তায় করা ইত্যাদি।
যদি মেহনতের উসূল বদলানোর প্রয়োজন হতো তবে সেটাও তিনি একা করতেন না।তিন জায়গার কোনো এক জায়গায় করতেন:
১.বিশ্ব ইজতেমা বাংলাদেশে,
২.রাইবেন্ড ইজতেমার মওকায় আর
৩.হজ্জের মওকায়।
কোথাও কোনো হযরতজি একক ফয়সালার উপর নিয়মনীতি প্রতিষ্ঠা করতেন না। সকল আহবাব ও তাবলীগের খায়ের খাহ উলামা ও সাথীদেরকে নিয়ে মাশওয়ারা করে তারা কাজ আঞ্জাম দিতেন ।
যখন হজরতজি মাওলানা ইনামুল হাসান রহ তৃতীয় আমীর হলেন,তখন তাকে জিজ্ঞেস করা হলো,আপনার এখনকার অনুভূতি কি? তিনি বললেন,”আগে তো আমার নিজের একটা রায় ছিলো আজ থেকে সেই অধিকারটুকুও হারালাম।এখন থেকে সাথীদের রায়ই আমার রায়”।
হযরতজি মাওলানা ইউসুফ রহঃএর কাছে একবার মাদ্রাজী এক হাজী সাহেব আসলেন। কথাবার্তা ও খানার পর্ব শেষে যখন হাজী সাহেব বেরিয়ে যেতে লাগলেন তখন হযরতজি রহ তাকে বললেন,ভাই এই কাজ কি তোমার বুঝে আসছে?
সাথী বললেন জ্বী!জ্বী!খুব বুঝে আসছে।হযরতজি রহ ঠাণ্ডা শ্বাস ছেড়ে বললেন,”ভাই আমার জন্য দোয়া করবেন। বিশ বছর ধরে এই মারকাজে পরে আছি আর এখনো এ কাজ পুরা বুঝে আসলো না”।
একবার এক ফাঁসীর আসামী আসলো হযরতজি মাওলানা ইলিয়াস রহ এর নিকট। এসে বলল, আমি আপনারই কাছে এসেছি, দোয়া নিতে এসেছি।হযরতজি বললেন,”আরে ভাই আমি তো এই মসজিদে পরেই আছি তোমার জন্য দোয়া করতে”।
এসমস্ত হযরতজিদের নিকট ছিলো মুসলমানদেরকে কদর করার গুণ।তারা কে কেমন দেখতেন না। তাদেরকে আখলাকে হাসানাহ দেখেতেন। তারাও এসমস্ত গুণগুলো শিখতো আর অমন হওয়ার চেষ্টায় থাকতো।
এরা ছিলেন হযরতজি!!!!
উলাইকা আ-বা-ই ফাজি’নী বিমিছলিহিম!!!!!!
Leave a Reply